আজ রবিবার, ১৪ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শান্ত শীতলক্ষ্যায় ভয়ংকর বাল্কহেড

নাদিম হাসান:
শীতলক্ষ্যা নদীতে বেপরোয়া বাল্কহেডের দাপট কমেনি। ঘাঁটের সামনে নৌ দুর্ঘটনার এ খলনায়কদের কারনে অনেকের মৃত্যু হলেও এখনও বেপরোয়া তারা। এতে নদী পারাপারে সব সময়েই ঝুঁকিতে থাকে মানুষ। দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির পর কর্তৃপক্ষ খুব নড়েচড়ে উঠলেও সারা বছর চুপ করে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

শহর ও বন্দরে যাতায়াতের জন্য শীতলক্ষ্যা নদীতে নয়টি খেয়াঘাঁট আছে। ঘাটগুলো হলো শহরের লঞ্চ টার্মিনাল এলাকার সেন্ট্রাল খেয়াঘাঁট, ৫ নম্বর সারঘাঁট, কেরোসিন ঘাঁট, হাজীগঞ্জ-নবীগঞ্জ, মাছুয়াবাজার-সোনাকান্দা, মদনগঞ্জ, বরফকল জামাল সোপ, লক্ষ্মণখোলা ও কুঁড়িপাড়া খেয়াঘাট। এসব ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী নদী পারাপার হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে কার্গো, বালুবাহী বাল্কহেডসহ বড় বড় নৌযান। এসব নৌযানের বেপরোয়া চলাচলের কারণে অতীতের মতো যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় কোন দুর্ঘটনা।
সূত্রে জানা যায়, শীতলক্ষ্যায় চলাচলরত নৌযানগুলোর মধ্য অধিকাংশই বালুবাহী বাল্কহেড। প্রতিদিন মেঘনার তিন নদীর মোহনা হতে ড্রেজারের সাহায্যে বালু উত্তোলন করে শীতলক্ষ্যার কলাগাছিয়া, মাহমুদনগর, সোনাকান্দা, বন্দর, নবীগঞ্জ, লক্ষণখোলা, কাঁচপুর ও রূপগঞ্জের কাঞ্চনসহ বিভিন্নস্থানে সরবরাহ করা হয়। মূলত বিভিন্ন স্থান ভরাট ও নির্মাণ কাজের জন্য এ বালু ব্যবহার হয়। তবে বালুবাহী বাল্কহেডগুলোর চালকদের বেশিরভাগই অদক্ষ বলে জানা গেছে। তাদের নেই কোন প্রশিক্ষন। বেশি ট্রিপ দেয়ার জন্য তারা বেপরোয়া গতিতে বাল্কহেড চালিয়ে থাকেন।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, গত ১০ বছরে শীতলক্ষ্যা নদীর বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত নৌ দুর্ঘটনায় কয়েক শ’ লোক নিখোঁজ ও মারা গেছেন। বেশিরভাগ দুর্ঘটনাই ঘটেছে বাল্কহেড ও কার্গোর ধাক্কায়।
বন্দর উপজেলার মাহামুদ নগর এলাকার বাসিন্দা রানা হামিদ জানায়, প্রতিদিন বন্দরের সেন্ট্রাল খেয়াঘাট দিয়ে ট্রলার ও নৌকায় করে লক্ষাধিক মানুষ পারাপার হয়। কিন্তু বেপরোয়াভাবে কার্গো, বাল্কহেড চলাচলের কারণে আতঙ্ক নিয়ে আমাদের খেয়া পারাপার হতে হচ্ছে। এর আগেও বালুবাহী ট্রলারের ধাক্কাতে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে এ ঘাটে।
একই উপজেলার ঘাড়মোড়া এলাকার বাসিন্দা মিহাদ বলেন, নদী পারাপারের সময়ে বেপরোয়াভাবে বাল্কহেড ও কার্গো চলাচলের কারণে শান্ত শীতলক্ষ্যা নদীতেও আতঙ্কে থাকি।
শীতলক্ষ্যায় খেয়া পারাপারকারী নৌকার মাঝি তোরাব আলী বলেন, নৌ দুর্ঘটনার জন্য একমাত্র দায়ী বাল্কহেড। বাল্কহেড লোড হয়ে চলাচল করলে পানির সঙ্গে মিশে থাকায় এটাকে দেখা যায় না। এ ছাড়া বাল্কহেড দ্রুতগতিতে চলায় দুর্ঘটনা বেশি ঘটে।